Skip to main content

Posts

Showing posts from March, 2024

প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ?

  ভূমিকা আজকের প্রবন্ধে আমরা যেই বিষয়গুলোর দিকে আলোকপাত করবো, তা হচ্ছে, প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ ২ নামক ইসলামী কেতাব লেখক এবং ইসলাম সম্পর্কে কেতাবটির লেখক যেসকল মিথ্যাচার করেছেন, সে সম্পর্কে। প্রকাশিত ঐ বইটির পাতায় পাতায় যেই বিপুল পরিমাণ মিথ্যাচার এবং হাস্যকর  সব কুযুক্তি  দেয়া হয়েছে, আমি শুধুমাত্র তার অল্পকিছু উদাহরণ তুলে ধরবো। উল্লেখ্য, আরিফ আজাদের কেতাবে খোদ ইসলাম ধর্মকেই আরিফ আজাদ এমনভাবে ধর্ষন করেছেন, যা পড়ে বোঝা মুশকিল যে, এটি কোন ছদ্মবেশি নাস্তিকের ইসলামকে অপদস্থ করার জন্য লেখা নাকি ইসলামপন্থী কারোর। কারণ ইসলামের খুবই গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিধান এই কেতাবে সরাসরি অস্বীকার করা হয়েছে। ইসলামী শরীয়ত অনুসারে এই কাজ সরাসরি কুফরি এবং এই কুফরি শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

প্যারাডক্সিকাল সাজিদ ২: গল্পে জল্পে আরিফ আজাদের মূর্খতা

  ভূমিকা সস্তা ও জনপ্রিয় ধারার অপবৈজ্ঞানিক ইসলামী কেতাব লেখক জনাব আরিফ আজাদ তার সদ্য প্রকাশিত বই “প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ ২” নামক কেতাবে আস্তিকতাকে যুক্তি ও বিজ্ঞানের আলোকে প্রতিষ্ঠিত করার অভিপ্রায়ে গল্পে জল্পে ডারউইনিজম নামে একটা অধ্যায় লিখেছেন। এই অধ্যায়টিতে উনি খুবই হাস্যকর এবং চমকপ্রদ কিছু দাবিদাওয়া উত্থাপন করেছেন, যা নিতান্তই কুযুক্তি ও মিথ্যাচারের সকল সীমা অতিক্রম করে ফেলেছে। সেইসব কুযুক্তি এবং মিথ্যাচার নিয়ে আলোচনা করাই এই লেখাটির উদ্দেশ্য। যদিও আমি ভালভাবেই জানি, যেই পাঠক-শ্রেণী এবং ভক্ত অনুসারী উনি গড়ে তুলেছেন, উনারা যুক্তি প্রমাণের চাইতে বিশ্বাসের ওপরেই আস্থাশীল। তাই যুক্তিপ্রমাণ উনাদের কাছে খুব বেশি বিবেচ্য হয়ে উঠবে না। বরঞ্চ মুক্তমনাদের যুক্তি প্রমাণের তোপের মুখে আরিফ আজাদই হয়ে উঠবেন উনাদের জন্য বিশ্বাসের ত্রাণকর্তা। আরিফ আজাদ যত অযৌক্তিক কথাই বলুক না কেন।

বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্নের উত্তর

সংশয়বাদ কাকে বলে? -  কোন দাবী কিংবা ঘটনাকে বিনা প্রশ্নে মেনে না নিয়ে বা অন্ধভাবে বিশ্বাস না করে তা সম্পর্কে সন্দেহ পোষণ এবং প্রশ্নবিদ্ধ করে বিষয়টির সত্যতা যাচাই করার পদ্ধতি হচ্ছে সংশয়বাদ।  সংশয়বাদ হচ্ছে চিন্তা করার একটি পদ্ধতি, যা অন্ধভাবে বিশ্বাস না করে সংশয়ী দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে যুক্তি প্রমাণ যাচাই বাছাই করে দেখার ওপর নির্ভরশীল। সংশয়বাদ শব্দটি অনেক বৃহৎ পরিসরে ব্যবহৃত হয়। যেকোন কিছুকে সন্দেহ, সংশয় পোষণ এবং প্রশ্নবিদ্ধ করার মনোভাবকেই সংশয়বাদ বলা যেতে পারে। সাধারণ্যে বহুল প্রচলিত কোনো ধারণাকে সন্দেহ করা অর্থে সংশয়বাদ শব্দটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। যারা সংশয়বাদের প্রতি আস্থা রাখেন বা সংশয়বাদ চর্চা করেন তাদেরকে সংশয়বাদী বলা হয়। সংশয়বাদীগণ মনে করেন, বিনা প্রশ্নে বিনা সন্দেহে কোন দাবীকে মেনে নেয়া সত্য জানার ক্ষেত্রে অন্তরায়। তাই সত্য জানার জন্য সর্বত্তম উপায় হচ্ছে সংশয় পোষণ করে যাচাই করে দেখা। সংশয়ী দৃষ্টিভঙ্গিই যাচাই করার ক্ষেত্র প্রস্তুত করে। চিরায়ত দর্শন থেকেই সংশয়বাদের ইংরেজি প্রতিশব্দ, স্কেপ্টিসিজম শব্দটি এসেছে। প্রাচীন গ্রিসে কিছু দার্শনিক ছিলেন যারা “কোনো কিছু...

কোরআনের বৈজ্ঞানিক ভুল (সম্পূর্ন)

আজ আমরা কুরআনের সমস্ত বৈজ্ঞানিক ভুলের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি।  কুরআনকে মানুষের হস্তক্ষেপ ছাড়াই পরম অপরিবর্তিত, সরাসরি, নিখুঁত, আল্লাহর বাণী হিসাবে বিবেচনা করা হয়।  কোরান যখন বলে, উদাহরণস্বরূপ, "তিনিই পৃথিবীকে বিস্তৃত করেছেন এবং তাতে পর্বত স্থাপন করেছেন", তখন আল্লাহই এই কথা বলছেন এবং আল্লাহ তৃতীয় ব্যক্তির মধ্যে নিজের কথা বলছেন।  খুব বিরল ক্ষেত্রে, কুরআন মানুষকে উদ্ধৃত করে বা মানুষকে কীভাবে প্রার্থনা করতে হয় তার একটি উদাহরণ দেয়। যাই হোক না কেন এটা আল্লাহর বাণী, তাই মুসলমানরা যখন কুরআন উদ্ধৃত করে তখন তারা বলে “আল্লাহ বলেন”।  অতএব, কুরআনের কোন ভুল, কোন মিথ্যা বক্তব্য, আল্লাহর ভুল।  যেহেতু আল্লাহ সর্বশক্তিমান, সর্বজ্ঞ ঈশ্বর, যদি কোন ত্রুটি থাকে, তাহলে এর অর্থ হল বইটি ঐশ্বরিক উৎসের নয় এবং মিথ্যা।  বস্তুত কুরআন নিজেই তা স্বীকার করে।  এটি বৈজ্ঞানিক ভুলের একটি তালিকা।  এই সব দৃষ্টিকোণ সব ভুল নাও হতে পারে.  কিছু লোক এই ভুলগুলির একটি বা দুটির সাথে একমত নাও হতে পারে, অন্যরা ভাববে কেন অন্য ভুলগুলি বাদ দেওয়া হয়।  আমি শুধুমাত্র তাদের উপর ফোকাস করার ...

যেভাবে জীবনের শুরু: সব পথ এসে মিলে গেল শেষে (শেষ পর্ব)

  বিংশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধ জুড়ে প্রাণের উৎস সন্ধানী বিজ্ঞানীগণ বিভিন্ন তত্ত্বে ভাগ হয়ে তাদের গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। প্রতিটি বিজ্ঞানীদল তাদের নিজস্ব চিন্তার স্বপক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করছিলেন কিন্তু বেশিরভাগ যুক্তিই ছিল আকাশকুসুম অনুমানের অসুস্থ প্রতিযোগিতা। যদিও এই প্রক্রিয়া বেশ কাজে দিয়েছিল এবং আগের অধ্যায়গুলোর পাঠ প্রমাণ করে সফলতাও এসেছিল কিছু কিন্তু প্রাণ বিকাশের প্রতিটি সম্ভাবনাময় ধারণা বা অনুমান শেষ পর্যন্ত আর একটি বড় প্রশ্ন এবং সীমাবদ্ধতার জন্ম দেয়। একারণেই এবার কিছু গবেষক একত্র হয়ে যৌথভাবে প্রাণ বিকাশের এতদিনের অমীমাংসিত প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে চেষ্টা করলেন।

যেভাবে জীবনের শুরু: কোষের জন্ম

  ২০০০ সালের প্রথমদিকে জীবনের প্রথম পথ চলা কীভাবে শুরু হয় এই গবেষণার প্রধান দুইটা তত্ত্ব প্রচলিত ছিল। আরএনএ ঘরানার বিজ্ঞানীগণ মনে করতেন প্রাণের বিকাশ হয়েছিল নিজেই নিজের প্রতিলিপি তৈরি করতে পারে এমন অণুজীব থেকে। ইতিমধ্যে যেসব বিজ্ঞানীগণ “বিপাক ক্রিয়া” প্রথম শুরু হয়েছিল বলে মনে করতেন তারা গভীর সমুদ্রের আগ্নেয়গিরির গরম তরল প্রবাহের জ্বালামুখে কীভাবে প্রাণের বিকাশ হয়েছিল তার বিশদ বিবরণ হাজির করলেন। যাইহোক চলমান এই বিতর্কের মধ্যেই আমাদের সামনে উপস্থাপিত হতে যাচ্ছে প্রাণের উৎস গবেষণার তৃতীয় আর একটা মতবাদ।

যেভাবে জীবনের শুরু: প্রোটনের শক্তি

দ্বিতীয় অধ্যায়ে আমরা দেখেছি কীভাবে ঘটেছিল প্রথম প্রাণের বিকাশ এই প্রশ্নে বিজ্ঞানীকুল তিনটি চিন্তাধারায় বিভক্ত হয়ে গিয়েছিলেন। বিজ্ঞানীগণের একপক্ষ মনে করেছিলেন প্রাণের সূচনা ঘটেছিল RNA অণুজীব থেকে। কিন্তু শুধু মতামত দিয়েই তারা ক্ষান্ত ছিলেন না, তারা প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে লাগলেন কীভাবে RNA বা তার সমগোত্রীয় অণুজীব স্বতঃস্ফূর্তভাবে পৃথিবীর প্রথমদিকের পরিবেশে প্রাণ সৃষ্টি করেছিল এবং সেই আদি প্রাণ কীভাবে নিজেরা নিজেদের প্রতিলিপি সৃষ্টি করেছিল। শুরুর দিকে তাদের প্রচেষ্টা যথেষ্ট আশা জাগানিয়া হলেও শেষপর্যন্ত তাদের শ্রম হতাশায় পর্যবসিত হয়। যাইহোক, প্রাণ সৃষ্টির গবেষণা এগিয়ে চলছিল কিন্তু সেই সময়ে আরেক দল বিজ্ঞানী যারা প্রাণের সৃষ্টি রহস্য নিয়ে গবেষণা করছিলেন তারা বুঝতে পারলেন প্রাণ সৃষ্টি হয়েছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন এক উপায়ে।

যেভাবে জীবনের শুরু: প্রথম স্বয়ম্ভূর খোঁজে

  ১৯৬০ সালের পরে বিজ্ঞানীগণ প্রাণের উৎস অনুসন্ধানে তিনটি মতবাদে বিভক্ত হয়ে গেলেন। কারো ধারণা জীবন শুরু হয়েছিল প্রাথমিক পর্যায়ের জৈবিক কোষ গঠনের মাধ্যমে। অন্য একদল বিজ্ঞানী মনে করেন জীবনের সূত্রপাত হয়েছিল রাসায়নিক বিপাক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। কিন্তু আরেক দল বিজ্ঞানী বংশগতি এবং আপন কোষের প্রতিলিপি সৃষ্টির উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। শেষ দলের বিজ্ঞানীগণ, যে কোষটি নিজেই নিজের অনুরূপ সৃষ্টি করতে পারে তাদের স্বরূপ কেমন ছিল সেটা অন্বেষণের চেষ্টা করেন। এই বিজ্ঞানীগণ প্রথম থেকেই জোর দিয়ে প্রচার করেন জীব-কোষ আরএনএ দিয়ে তৈরি।

যেভাবে জীবনের শুরু: পৃথিবীতে প্রাণের উৎপত্তি

  ভূমিকা পৃথিবীর প্রতিটি ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে আজ প্রাণ প্রতিষ্ঠিত কিন্তু পৃথিবী যখন সৃষ্টি হয় তখন পৃথিবী ছিল মৃত উষর গলিত পাথর। তাহলে কীভাবে জীবনের শুরু? সচারচার এমন প্রশ্ন খুবই কম লোকেই জিজ্ঞেস করে থাকে। মানব ইতিহাসের বেশিরভাগ পাতা জুড়ে লেখা আছে এবং প্রায় সবাই বিশ্বাস করে কোন না কোন ঈশ্বর আমাদের অতিপ্রিয় জীবনটা এক ফুঁৎকারে বানিয়ে দিয়েছেন। কিছুদিন আগেও ঈশ্বরব্যতীত অন্যকোন ব্যাখ্যা ছিল মানুষের চিন্তারও বাইরে।

13.8 বিলিয়ন বছর পূর্বে মহা বিস্ফোরণের (Big Bang) আগে কি ছিল?

  প্রাক কথন মহাবিশ্বের স্বরুপ কি,  মহাবিশ্ব কিভাবে শুরু হোল , কবে শুরু হোল, কে শুরু করলো, মহা বিস্ফোরণের (big bang) পূর্বে কি ছিল,  বৃহৎ সম্প্রসারণ  কিভাবে শুরু হোল, কিভাবেই বা মহাবিশ্ব ধ্বংস হবে এই সব প্রশ্ন আজকের না। যুগের পর যুগ ধরে মানুষ এই প্রশ্ন করে আসছে। যে কোন একটা ধর্ম গ্রন্থ খুলে দেখুন, দেখবেন এই মহাবিশ্ব কিভাবে এল, কে বানাল, মানুষ কিভাবে এল, মহাবিশ্বের ধংস কিভাবে হবে এই সব বিষয়ে কিছু না কিছু আলোচনা পেয়ে যাবেন। যদিও সে সবই কল্পনা। সেখানে পরীক্ষালব্ধ ফলাফলের কোন জায়গা নেই। অধিকাংশ মন গড়া গল্প। কিছু কিছু আধুনিক বৈজ্ঞানিক ধারনার সাথে মিলে গেলেও তা বিজ্ঞান নয়, সেগুলি নিতান্ত কিছু মন গড়া ধারণা।

বিগ ব্যাং থেকে মহাবিশ্ব

  যার শুরু নেই, তার শেষও নেই। যার শুরু-শেষ উভয়ই নেই, তার কোন স্রষ্টা থাকতে পারে না। যার জন্ম নেই, তার মৃত্যুও নেই। যার জন্ম-মৃত্যু উভয়ই নেই, সে কর্মক্ষম কোন সত্ত্বা হতেই পারে না। যার সৃষ্টি নেই, তার ধ্বংসও নেই। যার সৃষ্টিও ধ্বংস উভয়ই নেই, তার কোন অস্তিত্বই থাকতে পারে না।

নাস্তিকতা কী একটি বিশ্বাস?

  সম্প্রতি একজন তার একটি পোস্টের মন্তব্যে বলেছেন, “ঈশ্বর আছে বলা যেমন বিশ্বাস, নেই বলাও তেমনি একটি বিশ্বাস।” তিনি আরও লিখেছেন, “নাস্তিকদের ‘বিশ্বাসের’ ভিত্তিতে …” অর্থাৎ নাস্তিকতাকে তিনি একটি বিশ্বাস হিসেবে গণ্য করেছেন বা করেন। এই ভুলটি অনেকেই করেন যে, নাস্তিকতাকে একটি বিশ্বাস বা আরেকটি ধর্ম হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা। নাস্তিকতা সম্পর্কে একেবারেই সাধারণ জ্ঞান না থাকার কারণে অনেক শিক্ষিত মানুষও এই ভুলটি বারবার লেখেন, বলেন, এবং বিষয়টি প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করেন। এমনকি, কিছু নাস্তিকও নাস্তিকতা সম্পর্কে পর্যাপ্ত পড়ালেখার অভাবের কারণে এই ভুলটি বলতে বা লিখতে পারেন। সেই বিষয়েই লিখছি। এই কথাটির উত্তর আগে অসংখ্যবার লিখেছি, এখন আবারো লিখছি।

ঈশ্বরের অস্তিত্বে অবিশ্বাস মানেই কি ঈশ্বরের অনস্তিত্বে বিশ্বাস?

  নাস্তিকতা নিয়ে সারা পৃথিবীজুড়েই অসংখ্য ভুল ধারণা ছড়িয়ে আছে। তার মধ্যে আমার মতে সবচেয়ে বড় ভুল ধারণাটি হচ্ছে, ‘নাস্তিকরা মনে করে ঈশ্বর বলে কিছু নেই’। কেবল আস্তিকদের মধ্যেই যে এই ভুল ধারণাটি বিরাজ করে তা কিন্তু নয়, দুঃখজনকভাবে এমন অনেক নাস্তিকও আছেন যারা ভুল ধারণাটি পোষণ করেন।

বহুল প্রচলিত কিছু কুযুক্তি বা ফ্যালাসি বা কুতর্ক বা হেত্বাভাস

  ভূমিকা শুরুতেই কুযুক্তি বা কুতর্ক বা হেত্বাভাস বা Logical fallacy কাকে বলে, তা ব্যাখ্যা করা প্রয়োজন। এর মানে হচ্ছে, প্রতারণামূলক কিছু, বা কুতর্ক, বা কুযুক্তি অথবা ন্যায়সঙ্গত কর্মে ফাঁকি দেয়া। যুক্তিবিদ্যায় প্রচলিত কিছু অনর্থক কথার মারপ্যাঁচ কিংবা ভুলযুক্তি/কুযুক্তি/অপযুক্তি বা কুতর্ক জুড়ে দেয়ার প্রবণতা দীর্ঘদিন ধরে লক্ষ্যণীয় ছিল, এবং এগুলো সবই যে কুতর্ক তা দ্বিধাহীনভাবেই প্রমাণিত হয়েছে। তাই বর্তমান সময়ে বিতর্ক কিংবা একাডেমিক আলোচনার সময় কিছু কিছু যুক্তিকে কুতর্ক বা হেত্বাভাস বা logical fallacy হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। আসুন তাহলে আমরা শুরু করি, কুযুক্তি বা কুতর্ক বা হেত্বাভাস কাকে বলে, ইহা কত প্রকার এবং কী কী। এই আলোচনা সম্পূর্ণটুকুই আন্তর্জাতিক যুক্তিবিদ্যা বিষয়ক নানা বই থেকে সংগৃহীত। পৃথিবীর প্রায় সকল যুক্তিবাদী মানুষই বিষয়গুলো সম্পর্কে অবগত। অনুন্নত অসভ্য এবং অশিক্ষিত সমাজে যদিও এই কুতর্কগুলোই এখনো যুক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায়। কিন্তু এগুলো কোনটাই আসলে যুক্তি হিসেবে গণ্য হয় না। সহজভাবে বলতে গেলে, এই ধরণের কুযুক্তিগুলো সবই যুক্তিবিদ্যার শুরুতেই বাতিল করে দেয়া হয়। ...

শূন্য থেকে উদ্ভূত মহাবিশ্ব এবং শক্তির সংরক্ষণশীলতা

  ভূমিকা মানুষ বহুদিন ধরেই দুটি রহস্যের সাথে লড়াই করে আসছে, সেগুলো হল কেন মহাবিশ্ব কোটি কোটি বছর যাবৎ টিকে আছে আর কি করেই বা এই মহাবিশ্ব এলো। মোটামুটি সকল প্রাচীন সংস্কৃতিই তাদের নিজস্ব সৃষ্টিতত্ত্বের গল্প তৈরি করেছে এবং এদের বেশিরভাগই ঈশ্বরের হাতেই বিষয়টি ছেড়ে দিয়েছে, আর দার্শনিকরাও বিষয়টা নিয়ে কম ভাবনা চিন্তা করেন নি। কিন্তু বিজ্ঞানেরও বিষয়টি নিয়ে কিছু বলার আছে।

ইয়াজুজ মাজুজ | ইসলামী রূপকথার রাক্ষস খোক্কস

  ভূমিকা ছোটবেলার ঠাকুরমার ঝুলি কিংবা রূপকথার বইতে আমরা যারা রাক্ষস খোক্কসের গল্প পড়েছি তারা জানি যে, এই গল্পগুলো পড়তে ছোটবেলা বেশ মজাই লাগতো। সত্য হোক কিংবা মিথ্যা, পড়তে ভালই লাগে। মাঝে মাঝে আমাদের মা কিংবা খালারা রাক্ষসের গল্প বলে আমাদের খাওয়াতো, গোছল করাতো। অর্থাৎ যা আমরা স্বেচ্ছায় করতে চাইতাম না, গল্পের এইসব চরিত্রের কথা বলে একটু ভয় দেখিয়ে আমাদের দিয়ে সেই সব কাজ করিয়ে নিতো। তখন আমরা ছোট ছিলাম, জ্ঞানবুদ্ধি কম ছিল। সেই সময়ে এখনকার মত যুক্তি প্রমাণ দিয়ে বিচার বিবেচনা করা আমাদের পক্ষে সম্ভব হতো না। তাই আমরা সেই সব কথাই নির্দ্বিধায় বিশ্বাস করে নিতাম। কিন্তু যতই বড় হতে লাগলাম, বুঝতে শুরু করলাম, ডাইনি বুড়ির গল্প, শাকচুন্নী কিংবা মামদো ভুত, অথবা রাক্ষস খোক্কস, এগুলো সবই ছেলে ভুলানো কথা। তবে, বড় হওয়ার পরেও অনেকে এইসব গল্প বিশ্বাস করতে পারে। তাদের জন্য আমরা মানসিক চিকিৎসকের সাহায্য নিতে পারি। কারণ বড় হওয়ার পরেও এইসব রূপকথায় বিশ্বাস করা মানে হচ্ছে, তার মানসিক বিকাশটি ঠিকভাবে হয় নি। এখনো সেই রূপকথার জগতেই সে বসবাস করে। এরকম মাঝে মাঝেই কিছু মানুষকে পাওয়া যায়। এদের মানস...

ইসলাম এবং বিজ্ঞান শিক্ষার দ্বন্দ্ব

  ভূমিকা সেই ছোটবেলা থেকেই আমরা স্কুল থেকে পাওয়া অনেক বই খুব আনন্দের সাথে পড়ে পড়ে বড় হই। আমরা অনেক নতুন বিষয় সেইসব বইগুলো থেকে শিখি এবং জানি। সেই বইগুলোর মধ্যে কিছু বই হচ্ছে মানব সভ্যতার ইতিহাস, গুহাযুগে মানুষ কেমন ছিল, এরপরে মানুষ ধীরে ধীরে কীভাবে আগুন আর চাকা আবিষ্কার করলো, অস্ত্র তৈরি শিখলো, যোগাযোগ আর কথা বলার জন্য ধীরে ধীরে ছোট ছোট শব্দ উচ্চারণের মাধ্যমে ক্রমান্বয়ে ভাষার আবিষ্কার করলো, সাধারণ বৈজ্ঞানিক পরীক্ষানিরীক্ষা ইত্যাদি। সেইসব বই থেকে আমরা আরো নানাবিধ বিষয় জানতে পারি, যেগুলোর অনেককিছুই আমাদের প্রচলিত বিশ্বাসের পরিপন্থী।

কোরআনে আঙুলের ছাপের মিরাকল?

ভূমিকা কোরআনের বৈজ্ঞানিক মিরাকলের উদাহরণ হিসেবে বা কোরআনকে ঐশ্বরিক গ্রন্থ বলে প্রমাণ করার উদ্দেশ্যে অনেক ইসলামিক অ্যাপোলজিস্ট দাবি করে যে কোরআনে ১৪০০ বছর আগেই বলা হয়েছে, একজনের আঙুলের ছাপ অন্যজনের সাথে মিলে না। দাবিটির সাথে আমরা অনেকেই পরিচিত এবং সেটাই স্বাভাবিক, কেননা প্রচুরসংখ্যক ইসলাম ওয়েবসাইট থেকে দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। অনেক সংবাদমাধ্যম থেকেও দাবিটি প্রচারণা লাভ করেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যাণে ব্যাপকভাবে মুসলিমদের মধ্যে ছড়িয়েছে এবং জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। দাবিটি করা হয় কোরআনের সূরা আল-ক্বিয়ামাহ’র ৪ নং আয়াতকে কেন্দ্র করে, যেখানে বলা হয়েছে, আল্লাহ মানুষের আঙুলের অগ্রভাগসমূহও পুনর্বিন্যাস্ত করতে সক্ষম। এ প্রবন্ধে দাবিটি বিশ্লেষণ করে দাবিটির সত্যতা কতটুকু তা তুলে ধরা হবে।

নাস্তিকের লাশের সৎকার কীভাবে হবে?

  ভূমিকা নাস্তিকের মৃত্যুর পরে নাস্তিকের লাশ নিয়ে কি করা হবে তা নিয়ে মুমিনগনের চিন্তার শেষ নেই। একজন প্রশ্ন করলো, “ভাই, ধর্ম মানেন না ঠিক আছে, মৃত্যু তো মানেন। মানে মরবেন তো, নাকি? কোরআনে তো মৃত্যুর কথা বলা আছে, তাইলে নাস্তিকরা মরে ক্যান?”